ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের তাণ্ডবে সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্রায় ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির।
পুলিশ সুপার বলেন, রাতে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান প্রচণ্ড গতিতে সাতক্ষীরায় তাণ্ডব চালিয়েছে। এতে নদীর পানি বেড়ে প্রায় ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়েছে। জলোচ্ছ্বাসে প্রতাপনগর ইউনিয়নের: চাকলা, শুভদ্র কাঠি, কুকাউনিয়া, হিজলিয়া, দিঘলার আইটসহ ৭ টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২০/২৫ হাজার মানুষের বসতি ও মাছের ঘের পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া অনুলিয়ার বিসত এলাকায় ৩টি পয়েন্টে মেইন রোডে ১০ ফুট জলোচ্ছ্বাসে পাকা রাস্তা ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। শ্রীউলার হাজরাখালীর ২টি পয়েন্টে বাঁধভেঙে প্লাবিত হয়ে আশাশুনি পর্যন্ত পানি চলে উঠেছে।
তিনি আরেও বলেন, ঝড়ের সময়ে আম কুড়াতে গিয়ে গাছের চাপায় করিমন (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। সে সাতক্ষীরা সদরের কামালনগর এলাকার বাসিন্দা।
সাতক্ষীরা সদরের বাসিন্দা মনিরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে সাতক্ষীরার কাঁচা ও আধাপাকা বাড়িঘর ভেঙে পড়েছে। অনেক স্থানে বাড়ির উপরে গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে। এছাড়া সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনির বিভিন্ন ইউনিয়নে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম। শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, প্রতাপনগর, আনুলিয়া, খাজরা ও শ্রীউলা ইউনিয়নে ৪৫টিরও বেশি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে ছিল।
এরই মধ্যে শ্যামনগরের গাবুরা, পদ্মপুকুর, বুড়িগোয়ালিনী, প্রতাপনগর, খাজরা, কালিগঞ্জের মথুরেশপুরে নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে।
সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে জেলার অনেক স্থানে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কয়েকটি জেলার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কয়েকটি গ্রামও প্লাবিত হয়েছে। সবাইকে ধৈর্য্য ও সাহসের সাথে এ কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। বাঁধ সংস্কারে সকাল থেকে কাজ করবে সেনাবাহিনী। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গতদের সেবা ও খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় আম্ফান বৃহত্তর খুলনা উপকূল অতিক্রম করার সময় সুন্দরবন লাগোয়া সাতক্ষীরায় প্রবলবেগে আঘাত হানে। রাত ১০টায় প্রায় ১৩০ থেকে ১৪০ কি:মি বেগে ঝড়ো বাতাসের সাথে স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড়টি অতিক্রম করে।
স্বপ্নচাষ/আরএস
বাংলাদেশ সময়: ২:৫২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ মে ২০২০
swapnochash24.com | sopnochas24